গণিতের তত্ত্ব দিয়ে পদার্থবিজ্ঞানে ৩ বিজ্ঞানীর নোবেল জয়।


পদার্থের টপোলজিক্যাল অবস্থার সন্ধান দিয়ে পদার্থবিজ্ঞানে ২০১৬ সালের নোবেল জিতেছেন তিন ব্রিটিশ গবেষক ডেভিড জে থুলেস, এফ ডানকান এম হালডেন ও জে মাইকেল কোস্টারলিটজ। তাঁদের দেখানো পথে ইলেকট্রনিকসে নতুন এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলল। পুরস্কারের ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনারের অর্ধেক পাবেন থুলেস এবং বাকি অর্থ হাল্ডেন ও মাইকেল ভাগাভাগি করে নেবেন।টপোলজি হচ্ছে গণিতের একটি শাখা। তবে পদার্থের বিভিন্ন দশায় বদলে যাওয়ার ব্যাখ্যায় টপোলজিক্যাল গণিতকে সফলভাবে ব্যবহার করে তিন বিজ্ঞানী সবাইকে চমকে দিয়েছেন। এইআবিষ্কারের ফলে কোয়ান্টাম দুনিয়ার অনেক অজানা তথ্য এখন জানা যাবে। দ্য রয়াল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সের পার্মানেন্ট সেক্রেটারি গোরান কে হানসন এ বিষয়ে বলেন, তিন বিজ্ঞানীর অক্লান্ত প্রয়াসের কারণে পদার্থের অজানা জগতের দরজাগুলো উন্মোচিত হয়েছে, যেখানে বস্তুর অবস্থানগত প্রেক্ষাপটগুলো বদলে যেতে পারে। এই গবেষণায় সুপার কন্ডাক্টর, সুপার ফ্লুইড ও ম্যাগনেটিক ফিল্মের আচরণ বোঝার জন্য যে উচ্চতর গাণিতিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে ইলেকট্রনিকসের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেল।


আগে ধারণা ছিল, কোনো পাতলা স্তরের ওপর পদার্থের অতিপরিবাহিতা ঘটা সম্ভব নয়। তবে ১৯৭০-এর শুরুর দিকে মাইকেল কোস্টারলিটজ ও ডেভিড থুলেস তা ভুল বলে প্রমাণ করেছিলেন। গবেষণায় তাঁরা দেখাতে সক্ষম হন, খুব অল্প তাপমাত্রাতেও পদার্থের পাতলা স্তরের ওপর অতিপরিবাহিতা ঘটতে পারে। ১৯৮০ সালে থুলেস পদার্থের অত্যন্ত পাতলা স্তরের ওপরে বিদ্যুৎ প্রবাহের মাধ্যমে তার অভ্যন্তরে সৃষ্ট ধাপগুলোর স্তর মেপে জানান, সেখানে যে ভিন্ন ভিন্ন স্তরের সৃষ্টি হয়েছে তা প্রকৃতিগতভাবে টপোলজিক্যাল। ঠিক একই সময়ে ডানকান হালডেন তাঁর গবেষণায় দেখান, পদার্থের অভ্যন্তরে প্রাপ্ত চুম্বক-শৃঙ্খলের আচরণ বা বৈশিষ্ট্য বোঝার জন্য কিভাবে গণিতের টপোলজিক্যাল তত্ত্বটি ব্যবহার করা যায়। নোবেল বিজয়ী তিন বিজ্ঞানীর গবেষণালব্ধ ফলাফল ইলেকট্রনিকস জগতে এক নতুন দিগন্ত রচনা করে দিল। উদাহরণস্বরূপ, এই তত্ত্ব ব্যবহার করে কোয়ান্টাম কম্পিউটার অত্যন্ত জটিল গণনার জন্য সময় নেবে মাত্র এক সেকেন্ড বা তারও কম।তিন বিজ্ঞানী যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করলেও এখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। থুলেস ১৯৩৪ সালে যুক্তরাজ্যের বিয়ার্সডেনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করে বর্তমানে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে সে দেশেই ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনে কর্মরত।এফ ডানকান এম হালডেনের জন্ম ১৯৫১ সালে লন্ডনে। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৭৮ সালে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত।জে মাইকেল কোস্টারলিটজ ১৯৪২ সালে অ্যাবারডিনে জন্মগ্রহণ করেন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৬৯ সালে পিএইচডি করে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে ‘হ্যারিসন ই. ফার্ন্সওর্থ প্রফেসর অব ফিজিক্স’ হিসেবে কর্মরত।আগামী ১০ ডিসেম্বর পুরস্কারের জনক বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই তিন বিজ্ঞানীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে স্টকহোমের রয়েল সায়েন্স ইনস্টিটিউট থেকে রসায়নে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। :)

Pulak Mallik

Hello, I am Pulak Mallik. A social entrepreneur who has a dream to see a prejudice free society of educated, wise peoples. Here I am sharing and keeping my opinions, endeavor, challenges in my circumstances, success, failures & experiences

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

আপনার একটি মন্তব্য একজন লেখক কে ভালো কিছু লিখার অনুপেরনা যোগাই তাই প্রতিটি পোস্ট পড়ার পর নিজের মতামত জানাতে ভুলবেন না । তবে বন্ধুরা এমন কোন মন্তব্য পোস্ট করবেন না যার ফলে লেখকের মনে আঘাত করে ! কারণ একটা ভাল মন্তব্য আমাদের আরও ভাল কিছু লিখার অনুপেরনা যাগাই !!

নবীনতর পূর্বতন

نموذج الاتصال